বিদেশে পড়াশোনা করতে কোন দেশে কত IELTS স্কোর লাগে?
|

বিদেশে পড়াশোনা করতে কোন দেশে কত IELTS স্কোর লাগে?

বিদেশে পড়াশোনা: আপনার আইইএলটিএস স্কোর কত হওয়া উচিত?

স্বপ্ন দেখুন বিশ্বজুড়ে শিক্ষা গ্রহণের! কিন্তু জানেন কি, আপনার আইইএলটিএস (IELTS) স্কোর এক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? আসুন, আজকের ব্লগ পোস্টে আমরা জেনে নিই, বিদেশে পড়াশোনা করতে কোন দেশে কত IELTS স্কোর লাগে?

Table of Contents

আইইএলটিএস কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

বিদেশে পড়াশোনার জন্য আইইএলটিএস (International English Language Testing System) একটি অপরিহার্য পরীক্ষা। এটি আপনার ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা যাচাই করে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিশ্চিত হতে চায় যে, আপনি তাদের লেকচার বুঝতে পারবেন, অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে পারবেন এবং ক্লাসে আলোচনা করতে পারবেন। তাই, ভালো একটি আইইএলটিএস স্কোর আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ অনেক বাড়িয়ে দেয়।

বিদেশে পড়াশোনা করতে কোন দেশে কত IELTS স্কোর লাগে?

ভিন্ন ভিন্ন দেশে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইএলটিএস স্কোরের চাহিদা ভিন্ন হয়। নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় দেশের প্রয়োজনীয় স্কোর নিয়ে আলোচনা করা হলো:

যুক্তরাজ্য (United Kingdom)

যুক্তরাজ্য বরাবরই বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য পছন্দের একটি গন্তব্য। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য সাধারণত ৬.০ থেকে ৭.০ আইইএলটিএস স্কোর প্রয়োজন হয়।

See also  কীভাবে একটি প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করবেন:

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য:

  • বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কোর ৬.০ বা ৬.৫ চাওয়া হয়।
  • কিছু প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬.৫ বা ৭.০ স্কোর লাগতে পারে।

পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য:

  • এখানে সাধারণত ৬.৫ থেকে ৭.৫ স্কোর প্রয়োজন হয়।
  • কিছু বিশেষ কোর্সের জন্য (যেমন: এমবিএ) ৭.০ বা তার বেশি স্কোর দরকার হতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United States)

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য আইইএলটিএস স্কোর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আলাদা আলাদা স্কোর প্রয়োজন হয়।

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য:

  • কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬.০ স্কোর হলেও সুযোগ পাওয়া যায়।
  • তবে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ৬.৫ বা তার বেশি স্কোর চাওয়া হয়।

গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য:

  • এখানে স্কোর কমপক্ষে ৬.৫ হতে হয়, তবে অনেক ক্ষেত্রে ৭.০ বা তার বেশি স্কোর প্রয়োজন হয়।
  • যেমন, এমআইটি (MIT), স্ট্যানফোর্ড (Stanford) এর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো স্কোর থাকা আবশ্যক।

কানাডা (Canada)

কানাডায় পড়াশোনার মান বেশ উন্নত। এখানে আইইএলটিএস স্কোর সাধারণত ৬.০ থেকে ৬.৫ চাওয়া হয়।

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য:

  • বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬.০ স্কোর গ্রহণযোগ্য।
  • কিছু স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে ৬.৫ স্কোর দরকার হয়।

পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য:

  • এই ক্ষেত্রে ৬.৫ বা ৭.০ স্কোর প্রয়োজন হতে পারে।
  • কানাডার কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা আলাদা ব্যান্ড স্কোরও দেখতে চায়।

অস্ট্রেলিয়া (Australia)

অস্ট্রেলিয়াতেও অনেক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী পড়তে যায়। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আইইএলটিএস স্কোর সাধারণত ৬.৫ থেকে ৭.০ থাকতে হয়।

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য:

  • কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬.০ স্কোর দিয়েও ভর্তি হওয়া যায়।
  • তবে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে ৬.৫ স্কোর থাকা ভালো।

পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য:

  • এখানে সাধারণত ৬.৫ থেকে ৭.৫ স্কোর প্রয়োজন হয়।
  • কিছু কোর্সের জন্য আলাদাভাবে রাইটিং বা স্পিকিং-এ ভালো স্কোর থাকতে হয়।

জার্মানি (Germany)

জার্মানিতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। এখানে আইইএলটিএস স্কোর সাধারণত ৬.০ থেকে ৭.০ প্রয়োজন হয়।

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য:

  • বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ৬.০ স্কোর চাওয়া হয়।
  • কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬.৫ স্কোর দরকার হতে পারে।

পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য:

  • এখানে ৬.৫ থেকে ৭.০ স্কোর প্রয়োজন।
  • জার্মানিতে অনেক কোর্সের জন্য জার্মান ভাষার দক্ষতাও প্রয়োজন হতে পারে।
See also  Finite verb কাকে বলে? – tense ও subject agreement নিয়ম সহ

আইইএলটিএস স্কোর কেন গুরুত্বপূর্ণ?

আপনার আইইএলটিএস স্কোর শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যই নয়, ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক দেশই স্টুডেন্ট ভিসার জন্য একটি নির্দিষ্ট আইইএলটিএস স্কোর চায়। তাই, বিদেশে পড়াশোনার পরিকল্পনা করার আগে আপনার স্কোর সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভালো।

কিভাবে ভালো আইইএলটিএস স্কোর করবেন?

  • নিয়মিত অনুশীলন: প্রতিদিন ইংরেজি পড়া, লেখা, শোনা এবং বলার অভ্যাস করুন।
  • মক টেস্ট: পরীক্ষার আগে মক টেস্ট দিয়ে নিজের প্রস্তুতি যাচাই করুন।
  • ভালো টিউটর: একজন ভালো শিক্ষকের guidance আপনাকে সঠিক পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে।
  • নিজেকে প্রস্তুত করুন: পরীক্ষার নিয়মকানুন সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে প্রস্তুতি নিন।

কিছু দরকারি টিপস

  • ওয়েবসাইট দেখুন: প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে আইইএলটিএস সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া থাকে।
  • সরাসরি যোগাযোগ: আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি অফিসের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে সঠিক তথ্য জেনে নিন।
  • আপডেট থাকুন: আইইএলটিএস এবং ভিসা সংক্রান্ত নতুন নিয়মকানুন সম্পর্কে সবসময় খবর রাখুন।

আইইএলটিএস স্কোরের বিস্তারিত তালিকা

নিচের টেবিলে বিভিন্ন দেশের জন্য প্রয়োজনীয় আইইএলটিএস স্কোর সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়া হলো:

দেশআন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামপোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম
যুক্তরাজ্য৬.০ – ৬.৫৬.৫ – ৭.৫
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৬.০ – ৬.৫৬.৫ – ৭.০
কানাডা৬.০ – ৬.৫৬.৫ – ৭.০
অস্ট্রেলিয়া৬.০ – ৬.৫৬.৫ – ৭.৫
জার্মানি৬.০ – ৬.৫৬.৫ – ৭.০

আইইএলটিএস নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন (FAQ)

এখানে কিছু সাধারণ প্রশ্ন এবং উত্তর দেওয়া হলো, যা আপনাকে আইইএলটিএস সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে সাহায্য করবে:

আইইএলটিএস কি?

আইইএলটিএস (International English Language Testing System) হলো ইংরেজি ভাষায় আপনার দক্ষতা পরীক্ষার একটি আন্তর্জাতিক মাধ্যম। এটি মূলত চারটি অংশে বিভক্ত: শোনা (Listening), পড়া (Reading), লেখা (Writing) এবং বলা (Speaking)।

আইইএলটিএস পরীক্ষা কত প্রকার?

আইইএলটিএস মূলত দুই ধরনের হয়:

  • একাডেমিক (Academic): যারা বিদেশে পড়াশোনা করতে যেতে চান, তাদের জন্য এই পরীক্ষাটি প্রযোজ্য।
  • জেনারেল ট্রেনিং (General Training): যারা চাকরি বা ভিসার জন্য আবেদন করতে চান, তাদের জন্য এই পরীক্ষাটি দরকারি।

কোন আইইএলটিএস আমার জন্য প্রযোজ্য?

আপনি যদি বিদেশে পড়াশোনা করতে চান, তাহলে আপনার জন্য একাডেমিক আইইএলটিএস প্রযোজ্য। আর যদি আপনি চাকরি বা ভিসার জন্য আবেদন করতে চান, তাহলে জেনারেল ট্রেনিং আইইএলটিএস আপনার জন্য প্রযোজ্য।

See also  অনুচ্ছেদঃ বৈশাখী মেলা

আইইএলটিএস পরীক্ষার স্কোর কিভাবে গণনা করা হয়?

আইইএলটিএস পরীক্ষায় প্রতিটি অংশের জন্য আলাদাভাবে স্কোর দেওয়া হয়। এই স্কোরগুলো হলো:

  • শোনা (Listening): ০-৯
  • পড়া (Reading): ০-৯
  • লেখা (Writing): ০-৯
  • বলা (Speaking): ০-৯

এই চারটি অংশের গড় করে আপনার চূড়ান্ত স্কোর গণনা করা হয়।

ভালো স্কোর বলতে কি বোঝায়?

আইইএলটিএস-এ ভালো স্কোর বলতে সাধারণত ৬.৫ বা তার বেশি স্কোরকে বোঝানো হয়। তবে, আপনার কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় স্কোর সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভালো।

আমি কিভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারি?

আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কিছু উপায় নিচে দেওয়া হলো:

  • নিয়মিত ইংরেজি অনুশীলন করুন।
  • বিভিন্ন মক টেস্ট দিন।
  • ভালো মানের বই এবং অনলাইন রিসোর্স ব্যবহার করুন।
  • একজন অভিজ্ঞ শিক্ষকের সাহায্য নিন।

আইইএলটিএস পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কিভাবে করব?

আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আপনি ব্রিটিশ কাউন্সিল (British Council) অথবা আইডিপি (IDP) এর ওয়েবসাইটে যেতে পারেন। সেখানে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

আইইএলটিএস পরীক্ষার ফি কত?

আইইএলটিএস পরীক্ষার ফি সাধারণত ১৫,৭৫০ টাকা থেকে ১৬,২৫০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে, এটি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।

আইইএলটিএস পরীক্ষার ফলাফল কতদিন পর্যন্ত বৈধ থাকে?

আইইএলটিএস পরীক্ষার ফলাফল সাধারণত ২ বছর পর্যন্ত বৈধ থাকে।

যদি আমার স্কোর কম আসে, তাহলে কি আমি আবার পরীক্ষা দিতে পারব?

হ্যাঁ, আপনি আপনার স্কোর নিয়ে সন্তুষ্ট না হলে আবার পরীক্ষা দিতে পারবেন। আইইএলটিএস পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই।

বিদেশে পড়াশোনার জন্য আইইএলটিএস-এর পাশাপাশি আর কী কী প্রয়োজন?

বিদেশে পড়াশোনার জন্য আইইএলটিএস-এর পাশাপাশি আরও কিছু জিনিস প্রয়োজন, যেমন:

  • আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যেমন: মার্কশিট, সার্টিফিকেট)।
  • ভিসার জন্য আবেদন।
  • আর্থিক প্রস্তুতি (টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার খরচ)।

আমি কিভাবে আমার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করব?

আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন। সাধারণত, অনলাইনে আবেদন করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করতে হয়।

বিদেশে পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ কিভাবে পাব?

বিদেশে পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার অনেক উপায় আছে। কিছু সাধারণ স্কলারশিপ হলো:

  • মেরিট-ভিত্তিক স্কলারশিপ।
  • আর্থিক প্রয়োজন-ভিত্তিক স্কলারশিপ।
  • বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি স্কলারশিপ।

আপনি আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য স্কলারশিপ ওয়েবসাইটে খোঁজ নিতে পারেন।

বিদেশে পড়াশোনার পর কি কাজের সুযোগ আছে?

বিদেশে পড়াশোনার পর কাজের সুযোগ অনেক দেশের নিয়ম-কানুনের উপর নির্ভর করে। কিছু দেশে পড়াশোনার পর কাজের ভিসা পাওয়া সহজ, আবার কিছু দেশে কঠিন। তাই, পড়াশোনার আগে এই ব্যাপারে জেনে নেওয়া ভালো।

শেষ কথা

বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন পূরণ করতে আইইএলটিএস একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সঠিক প্রস্তুতি এবং সঠিক তথ্যের মাধ্যমে আপনিও আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন। আপনার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হোক, এই কামনায় আজকের ব্লগটি এখানেই শেষ করছি। যদি আপনার কোন বিশেষ প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

সম্পর্কিত পোস্টসমূহ:

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *